স্বদেশ ডেস্ক: বিএনপি সরকারের সাবেক বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী একেএম মোশাররফ হোসেন বর্তমানে ‘মানসিক ভারসাম্যহীন’ বলে দাবি করেছেন তার আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. শাহ আলম। এই কারণ দেখিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাবেক এই উপদেষ্টার বিরুদ্ধে আদালতে চলমান মামলার কার্যক্রম স্থগিত চাইবেন শাহ আলম। গতকাল দুপুরে আমাদের সময়কে এ তথ্য জানান তিনি।
বুধবার একেএম মোশাররফ হোসেনকে হুইল চেয়ারে করে ঢাকার নিম্ন আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় সঙ্গে ছিলেন তার পুত্রবধূ, ড্রাইভার ও ব্যক্তিগত চিকিৎসক। কাডানার কোম্পানি নাইকোর কাছ থেকে ঘুষ হিসেবে গাড়ি নেওয়ার মামলায় জামিন বাতিল হয়েছে তার। পুনর্বার জামিন চাইতে গতকাল আদালতে আনা হয় মোশাররফকে।
পরপর ৩টি ধার্য তারিখে তাকে আদালতে হাজির না করায় এবং তদন্ত কর্মকর্তা সাক্ষী দিতে আসায় গত ২৫ আগস্ট জামিন বাতিল করেন ঢাকার ২ নম্বর বিশেষ জজ আদালত। নাইকো, গ্যাটকো ও বড় পুকুরিয়া কয়লাখনি দুর্নীতির মামলার আসামি এই নেতা মানসিকভাবে অসুস্থ উল্লেখ করে আইনজীবী শাহ আলম তার জামিনের জন্য আবেদন করেন। বিচারক এএসএম রুহুল ইমরান ২৫ হাজার টাকা মুচলেকায় জামিন মঞ্জুর করেন।
শাহ আলম জানান, ওয়ান ইলেভেনের সময় গ্রেপ্তার হয়ে দুইবারের নির্বাচিত এই সংসদ সদস্য প্রায় দুই বছর কারাবন্দি ছিলেন। কারামুক্তির পর থেকে ধীরে ধীরে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। এখন অধিকাংশ কথাই বোঝেন না। কিছু মনেও রাখতে পারেন না। তিনি এখন সম্পূর্ণ মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন একজন মানুষ। আইনজীবী আরও বলেন, গত দেড় মাস ধরে তাকে গোসল করানো যায় না। সারাক্ষণ বাসায়ই থাকেন। এক রুম থেকে অন্য রুমে একা যেতে পারেন না। বাইরে হুইল চেয়ারে ছাড়া নেওয়া যায় না। আজ আদালতে তাকে অ্যাম্বুলেন্সে করে আনা হয়েছে। শাহ আলম বলেন, এমন একজন মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তির বিচার চলতে পারে না। আমরা আদালতের পরবর্তী ধার্য তারিখে মামলার কার্যক্রম স্থগিত রাখার আবেদন করব।
উল্লেখ্য, কানাডিয়ান কোম্পানি নাইকোকে কাজ দেওয়ার জন্য ২৩ হাজার ৮৩৫ টাকা রেজিস্ট্রেশন ফিসহ ৯৫ লাখ ৫৮ হাজার টাকা মূল্যের ল্যান্ড ক্রুজার জিপ গাড়ি এবং বিদেশ ভ্রমণের জন্য ৫ হাজার কানাডিয়ান ডলার ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে ২০১২ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি শাহবাগ থানায় মামলা দায়ের করা হয়। মামলায় মোশাররফ হোসেন ছাড়াও নাইকোর (বাংলাদেশ) সাবেক প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফও আসামি। মামলাটিতে একই বছরের ২ আগস্ট আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন দুদকের উপপরিচালক এসএম সহিদুর রহমান। চার্জশিটের ২৫ জন সাক্ষীর মধ্যে ২৩ জনের সাক্ষ্য চলমান।